শিরোনাম: |
হাদিসের আলোকে শাফা’আতে মুস্তফা
মুহাম্মদ বখতিয়ার উদ্দীন
|
হযরত জাবের রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, আমাকে পাঁচটি বস্তু (নে’মাত) দেয়া হয়েছে, যেগুলো আমার পূর্বে কাউকে দেয়া হয়নি। ১. আমাকে এক মাসের দূরত্ব পর্যন্ত প্রভাব বিস্তারকারী ভক্তি প্রযুক্ত ভয় বিশিষ্ট চেহারা দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে। ২. আমার কারণে সমগ্র পৃথিবীকে মসজিদ তথা নামাযের উপযুক্ত এবং পবিত্র করে দেয়া হয়েছে; সুতরাং আমার উম্মতের যে কারো কাছে নামাযের সময় হলে যে কোন জায়গায় নামায পড়ে নিতে পারবে। ৩. আমার জন্য গণীমতের মাল হালাল করা হয়েছে, যা আমার পূর্বে অন্য কারো জন্য হালাল করা হয়নি। ৪. আমাকে শাফা’আতের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে এবং ৫. অন্যান্য নবীগণ প্রেরিত হয়েছেন নির্দিষ্ট গোত্রের জন্য আর আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে সমগ্র মানব জাতের জন্য। (সূত্র :- বুখারী ও মুসলিম শরীফ)
হাদীস শরীফের ব্যাখ্যা সাধারণ মানুষদেরকে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য এবং বাতিল অপশক্তিকে দুর্বল করার জন্য বিশেষ করে শত্রæদের কাবু করার নিমিত্তে আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তাঁর প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নূরানী চেহারা মুবারকে এমন একটি ব্যতিক্রমধর্মী আকর্ষণ ভক্তিপ্রযুক্ত ভয় ঢেলে দিয়েছেন, যা এক মাসের দূরত্ব পর্যন্ত বিস্তার করত। ইতিহাস তার সাক্ষ্য বহন করে। মক্কার দূর্দান্ত প্রতাপশালী ব্যক্তিবর্গ, যেমন- আবূ জাহল, আবূ লাহাব, ওতবা, শাইবা, ওয়ালিদ ইবনে মুগীরা প্রমুখ গোপনে অনেক ষড়যন্ত্রের জাল বুনলেও নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র সামনে দাঁড়িয়ে তা বাস্তবায়ন করার সাহস পায়নি কখনো। তাছাড়া তাঁকে আল্লাহ তা’আলা এমন সব বৈশিষ্ট্য দিয়েছেন, যেগুলো অন্য কোন নবী ও রাসূলকে দেননি। আলোচ্য হাদীস শরীফে এমন কতিপয় বৈশিষ্টের কথা এরশাদ করা হয়েছে। ওইগুলোর সংক্ষিপ্ত আলোচনা নিন্মে প্রদত্ত হলো - এক. হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত অপর এক হাদীস শরীফে দেখা যায়- নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন- نصرت بالرعب على العدو “আমি সাহায্যপ্রাপ্ত হয়েছি শত্রুদের উপর ভক্তিপ্রযুক্ত ভয় দিয়ে।” উল্লেখিত হাদীসে ‘এক মাস দূরত্ব পর্যন্ত রসূলে পাকের ভক্তিপ্রযুক্ত ভয়-ভীতি সমৃদ্ধ চেহারার কথা বলে এটা বুঝানো হয়েছে যে, কোন দুশমন নবী পাকের চেহারা মুবারক দেখার পর এমনভাবে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ত যে, তার সমস্ত শরীরে কম্পন সৃষ্টি হত, আর তা চলার পথে তার মধ্যে এক মাস পর্যন্ত বহাল থাকত। এ জাতীয় আরো বহু হাদীস শরীফ বিশুদ্ধ বর্ণনাসূত্রে বিভিন্ন হাদীসগ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে। একমাস দূরত্ব’- এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আল্লামা ইবনে হাজার আসক্বালানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন- ‘মুসলামানদের প্রধান দুশমন কাফির-ইহুদী ও নাসারাদের প্রাণকেন্দ্র তথা শাম-ইরাক, ইয়ামেন এবং মিসর ইত্যাদি এলাকায় পৌছতে একমাস যাবৎ চলতে হতো। [ফাতহুল বারী, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১২৮ পৃষ্ঠা] হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্র্ণিত অপর হাদীসে ‘একমাস’র স্থলে ‘দুইমাস’ দূরত্বের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। [তাবরানী, আল-মুজামুল কবীর] রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র শরীর ও চেহারা মুবারকে এতই সৌন্দর্য ও সম্মোহনী প্রভাব ছিল যে, হঠাৎ কেউ দেখলেই চমকে ওঠতো আর একাগ্রচিত্তে কেবল চেহারার দিকে তাকিয়ে থাকত। এ বিষয়ে তৎকালীন প্রসিদ্ধ চিকিৎসা বিজ্ঞানী ইবনে আবূ রমসা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি যেদিন মদীনা মুনাওয়ারায় আসলাম, সেদিন প্রথমে রসূলে পাকের দর্শন লাভ হয়নি। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর হঠাৎ দেখলাম এক অসাধারণ নূরাণী অবয়বের ব্যক্তি আমাদের সামনে তশরীফ আনলেন, তাঁর পরনে ছিল দু’টি সবুজ রঙের পোষাক আমি আমার ছেলেকে বললাম, “খোদার শপথ করে বলছি! ইনিই হলেন আল্লাহর রসূল! অতঃপর আমার ছেলে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র নূরানী দেহ ও চিত্তাকর্ষক চেহারা দর্শনে এতবেশি প্রভাবিত হল যে, দেখলাম তার সমস্ত শরীরে কম্পন শুরু হয়ে গেছে। [মুসনাদে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল :২য় খন্ড, ২২৮পৃষ্ঠা] দুই. নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন- আমার কারণে সমগ্র পৃথিবীকে মসজিদ বানিয়ে দেয়া হয়েছে এবং পবিত্র করে দেয়া হয়েছে। পূর্ববর্তী নবীর উম্মতগণ তাদের ইবাদত-বন্দেগী ও নামায আদায় কারার জন্য নির্ধারিত ইবাদতখানা ছিল। নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া অন্য কোথাও ইবাদতের অনুমতি ছিল না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে উম্মতে মুহাম্মদীর বৈশিষ্ট্য ব্যতিক্রম। নবীজির শুভগমনের সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ্ রব্বুল আলামীন মাঠ- ময়দান, ঘর-বাড়ি-আঙ্গিনা, রাস্তা-ঘাট সব জায়গাকে পবিত্র ও ইবাদতের জন্য উপযুক্ত করে দিয়েছেন। তাই আমরা নামাযের সময় হলে সুবিধামত যে কোন পবিত্র জায়গায় নামায আদায় করে নিতে পারি। আমাদের জন্য এটা বৈধ। বিষয়টিকে নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো স্পষ্ট করেছেন এভাবে- আমার উম্মতের সামনে নামাযের ওয়াক্ত হাযির হলে সে যেখানেই থাকুকনা কেন, নামায পড়ে নিলে তা আদায় হয়ে যাবে। হাদীসে পাকের আলোচ্য বর্ণনা দ্বারা বুঝা গেল যে, সমগ্র যমীনের উপর নামাযের অনুমতি দেয়া হয়েছে। ইসলামী ফিক্বহের দৃষ্টিতে এরপরও কিছু জায়গায় নামায পড়া শরীয়তের দৃষ্টিতে নিষেধ পরিলক্ষিত হয়। যেমন- কবরস্থান, গোসলখানা, উট-গরু বাঁধার জায়গা এবং ওই সব জায়গা যেখানে নাপাকী লেগে আছে ইত্যাদি। উল্লেখ্য এগুলোও নির্দিষ্ট কারণ সাপেক্ষে। বস্তুত: উল্লেখিত জায়গাগুলোও উল্লিখিত অবস্থা বিরাজ করার পূর্বে নামাযের উপযোগী ছিল। তিন. তৃতীয় স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হল যুদ্ধলব্ধ সম্পদ তথা গণীমতের মাল আমাদের প্রিয়নবীর জন্য হালাল ঘোষণা করা হয়েছে; যা অন্য কোন নবীর জন্য হালাল ছিল না। পূর্ববর্তী উম্মতের জন্য গণীমতের মাল বৈধ ছিল না। তাই তাদের গণীমতের সম্পদসমূহ আগুন গ্রাস করে ফেলত। এর রহস্য ছিল তাদের জিহাদ যেন গণীমত লাভের উদ্দেশ্যে না হয়, বরং নিষ্ঠার সাথে আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জনার্থে হয়। এদিকে উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য গণীমত হালাল করা হয়েছে; কেননা এ উম্মতের অন্তরে নিষ্ঠার প্রাধান্য ছিল; গণীমত লাভ প্রধান উদ্দেশ্য নয়। ঐতিহাসিক বদরের যুদ্ধের ঘটনা পর্যালোচনা করলে বাস্তব চিত্র ভেসে ওঠে। যাতে মুসলমানদের কোন অত্যাধুনিক এমনকি প্রয়োজনীয় অস্ত্র-সস্ত্রও ছিল না। পক্ষান্তরে দুশমনদের ভারী-ভারী অস্ত্র ও হাতিয়ারের সামনে একমাত্র মহান আল্লাহ্র গায়েবী সাহায্যের কারণে মুসলমানগণ গৌরবগাঁথা বিজয় অর্জনে সক্ষম হয়েছিলেন। মুসলমানদের বীরত্বপূর্ণ আক্রমনে কাফির বাহিনী পর্যদুস্ত হয়ে তাদের অস্ত্র-সস্ত্র, মাল-সামগ্রী ফেলে পালিয়ে যাওয়ার পরও কোন মুসলমান ওইসব গণীমতের মালের দিকে হাতও বাড়াননি। বরং সকল গণীমতের মাল একত্রিত করা হলে মহান রব্বুল আলামীন পবিত্র ক্বোরআনের বাণী অবতীর্ণ করলেন - لَوْلَا كِتَابٌ مِنَ اللَّهِ سَبَقَ لَمَسَّكُمْ فِيمَا أَخَذْتُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ (৬৮) فَكُلُوا مِمَّا غَنِمْتُمْ حَلَالًا طَيِّبًا অর্থাৎ- যদি আল্লাহ পূর্বেই একটা (বিধান) লিপিবদ্ধ না করতেন, তবে হে মুসলমানগণ! তোমরা যা কাফিরগণের নিকট থেকে মুক্তিপণের মাল গ্রহণ করেছ, তজ্জন্য তোমাদের উপর মহাশাস্তি আসত। সুতরাং তোমরা আহার কর যে-ই গণীমত তোমরা লাভ করেছ, বৈধ-পবিত্র হিসেবে।[সূরা আনফাল-৬৮-৬৯] আরো এরশাদ হয়েছে- وَعَدَكُمُ اللَّهُ مَغَانِمَ كَثِيرَةً تَأْخُذُونَهَا فَعَجَّلَ لَكُمْ هَذِهِ وَكَفَّ أَيْدِيَ النَّاسِ عَنْكُمْ وَلِتَكُونَ آيَةً لِلْمُؤْمِنِينَ وَيَهْدِيَكُمْ صِرَاطًا مُسْتَقِيمًا (২০) অর্থাৎ - আল্লাাহ তা’আলা তোমাদেরকে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধলব্ধ সম্পদের ওয়াদা দিয়েছেন, যা তোমরা লাভ করবে। তিনি তা তোমাদের জন্য তরাšি^ত করবেন আর তিনি তোমাদের থেকে শত্রæদেরকে স্তব্ধ করে দিয়েছেন যাতে এটা মু’মিনদের জন্য এক নিদর্শন হয় এবং তোমাদেরকে সরল পথে পরিচালিত করেন। [সূরা ফাতাহ, আয়াত - ২০] চার. اعطيت الشفاعة অর্থাৎ আমাকে শাফা‘আতের ক্ষমতা দান করা হয়েছে ক্বিয়ামতের কঠিন দিনে সবাই ‘এয়া নাফসী’ এয়া নাফসী’ তথা নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকবে। অসনহীয় গরমে অতিষ্ঠ হয়ে একটু ছায়া পাওয়ার আশায় এদিক- সেদিক ছুটাছুটি করবে। ঠিক সেই কঠিন মুসীবতের সময় আমাদের প্রিয়নবীই একমাত্র প্রথমে সমস্ত উম্মতের জন্য শাফায়াত করবেন। শাফা’আত-ই কুবরা তথা বৃহত্তম সুপারিশ’র ক্ষমতা একমাত্র আমাদের নবী ছাড়া আর কাউকে দেয়া হয়নি। আমাদের নবী সুপারিশের দরজা উন্মুক্ত করার পর অন্যান্য সুপারিশকারীরা তাঁদের সুপারিশ উত্থাপন করবেন। হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, لكل نبي دعوة مستجابة يدعو بها، وأريد أن أختبئ دعوتي شفاعة لأمتي في الآخرة অর্থাৎ, প্রত্যেক নবীর জন্য একেকটি মাক্ববুল দো’য়া রয়েছে, যা দ্বারা তিনি আল্লাহ্র দরবারে দো’য়া করে থাকেন। আমি আমার দু’আটা পরকালের জন্য সংরক্ষণ করে রাখতে চাই, যা দ্বারা পরকালে আমার উম্মতের জন্য শাফা’আত করব। [বুখারী শরীফ, হাদীস নং ৫৯৪৫] হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন - عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: سَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يَشْفَعَ لِي يَوْمَ القِيَامَةِ، فَقَالَ: أَنَا فَاعِلٌ قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ فَأَيْنَ أَطْلُبُكَ؟ قَالَ: اطْلُبْنِي أَوَّلَ مَا تَطْلُبُنِي عَلَى الصِّرَاطِ. قَالَ: قُلْتُ: فَإِنْ لَمْ أَلْقَكَ عَلَى الصِّرَاطِ؟ قَالَ: فَاطْلُبْنِي عِنْدَ الْمِيزَانِ. قُلْتُ: فَإِنْ لَمْ أَلْقَكَ عِنْدَ الْمِيزَانِ؟ قَالَ: فَاطْلُبْنِي عِنْدَ الحَوْضِ فَإِنِّي لاَ أُخْطِئُ هَذِهِ الثَّلاَثَ الْمَوَاطِنَ. অর্থাৎ: আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র দরবারে ক্বিয়ামত দিবসে আমার জন্য শাফা’আত করার আবেদন করলাম। উত্তরে নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করলেন, হ্যাঁ আমিই শাফা’আত করব। অতঃপর আমি আবেদন করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! সে দিন আমি আপনাকে কোথায় তালাশ করব? নবী -ই পাক এরশাদ করলেন, তুমি তালাশ করবে পুলসিরাতের পাশে” আমি বললাম,“যদি সেখানে আপনার সাক্ষাৎ না পাই তাহলে? উত্তরে আল্লাহর রসূল এরশাদ করলেন, “তাহলে তুমি তালাশ করবে আমাকে মীযানের পাশে। “আমি আবেদন করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! যদি সেখানেও না পাই? “উত্তরে আল্লাহ্র হাবীব এরশাদ করলেন, “তাহলে তুমি আমাকে ‘হাউয-ই কাউসারে তালাশ করবে। কেননা, আমি সেদিন এই তিন স্থানেই থাকব। [তিরমিযী, মুসনাদে ইমাম আহমদ, আত্তারিখুল কবির, ফাতহুল বারী] পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে.. عَسَى أَنْ يَبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَحْمُودًا- অর্থাৎ “নিশ্চয় আপনার প্রভু আপনাকে ‘মক্বাম-ই মাহমূদ’র আসনে সমাসীন করবেন।” তিরমিযী শরীফে রয়েছে হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বণিত, রসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উক্ত আয়াতে ‘মক্বাম-ই মাহমূদ’র ব্যাখ্যা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি এরশাদ করেন هى الشفاعة - (সেটা হল শাফা‘আত)। পরিশেষে, এ হাদীস শরীফ হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ থেকে আমাদের আক্বা ও মাওলা’র বিশেষ মর্যাদার প্রমাণ পাওয়া যায়। ওই বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে হুযূরের শাফা‘আতের অনন্য ক্ষমতা। এছাড়াও প্রসিদ্ধ সনদে আরো বহু হাদীস শরীফ রসূল-ই আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র শাফা’আতের প্রমাণ বহন করে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বর্তমানে কিছু সংখ্যক মুসলমান নামধারী জ্ঞানপাপী নবী পাকের শাফা’আতকে অস্বীকার করে বসেছে। তাদের জন্য এ হাদীস শরীফ ও এর ব্যাখ্যা সত্যিই পথ প্রদর্শন করবে। বস্তুতঃ যারা নবী পাকের শাফা‘আতকে অস্বীকার করে, তারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের অনুসারী নয়। এরা ভ্রান্ত ও জাহান্নামী; এরা নবীদ্রোহী। আল্লাহ পাক আমাদেরকে এদের ভ্রান্ত আকীদামুক্ত সত্যিকার শান-মান ইত্যাদি উপলদ্ধি করার তাওফীক্ব দান করুন ও পরকালে প্রিয়নবীর শাফা‘আত নসীব করুন, আমীন! |